ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নে চাঞ্চল্যকর জোড়া খুন মামলায় আশরাফুল ইসলাম রাব্বি (৩৭) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাব্বি জেলা শহরের কাজিপাড়ার মুমিনুল ইসলামের ছেলে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে ভারতে পালানোর সময় তাকে জেলার কসবা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে বিষয়টি প্রকাশ করেনি পুলিশ।
তিনি আরও জানান, নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী এরশাদুল হক ও তার সহযোগী বাদল সরকারকে গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় এরশাদুলের ছোট ভাই বাদী হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতার আশরাফুল ইসলাম রাব্বি জোড়া খুনের মামলার ১নং আসামি নজরুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহযোগী।
রাব্বির জোড়া খুনের ঘটনায় অন্যতম মূল আসামি রাব্বি। আসামি আশরাফুল ইসলাম রাব্বিকে ডিবি পুলিশের সহায়তায় কসবা সীমান্তবর্তী এলাকার বিদ্যানগর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে পুলিশ। আসামি রাব্বি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন আরও জানান, ২০১৯ সালের ১লা এপ্রিল খুন হন এরশাদুল হকের চাচাতো ভাই সাইদুল্লাহ (৩০)। ওই খুনের ঘটনায় বাদী হন এরশাদুল হক। এতে একই গ্রামের বাসিন্দা আবু নাছির ও তার ছেলে নজরুল ইসলামসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়। আবু নাছির এবং এরশাদুলের বাড়ি পাশাপাশি। ওই হত্যা মামলা আপস করার কথা বলে আবু নাছিরের দলের কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকা নেন এরশাদুল হক। ৮০ লাখ টাকা নিয়েও আপস না করে মামলা চালিয়ে যাওয়ায় এরশাদুলের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আবু নাছিরের ছেলে নজরুল।
এদিকে নজরুলের বাবা আবু নাছিরকে ওই হত্যা মামলায় কারাগারে পাঠান আদালত।
মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন আরও জানান, জেলা শহরের কাজিপাড়ার রাব্বির সঙ্গে নজরুলের পূর্বপরিচয় ছিল। গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে রাব্বি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, একটি ডাকাতির মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর গত ১ মাস ধরে তিনি নজরুলের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। এই সুবাদে তারা এরশাদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে রাব্বি এবং নজরুল পৃথক দুটি মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে যান। প্রথমে এরশাদুলকে বহনকারী মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন রাব্বি। এরপর নজরুল তার মোটরসাইকেল থামিয়ে এরশাদুল ও বাদলকে লক্ষ্য করে গুলি করেন।
এরপর রাব্বি ও নজরুল জেলা শহরে এসে আলাদা হয়ে পালিয়ে যান।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে ওয়াজ মাহফিল থেকে ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাটঘর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ডা. আবুল কাসেমের ছেলে ও আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী এরশাদুল হক ও তার সহযোগী বাদল সরকারকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।